খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি
খাগড়াছড়িতে থামছেই না পাহাড় কর্তন। পরিবেশগত প্রভাব নিরূপন ছাড়াই পাহাড় কাটছে প্রভাবশালী। উন্নয়ন কাজের দোহাই দিয়ে প্রকাশ্যেই চলে পাহাড় কাটা ।
জেলার মহালছড়িতে অবৈধভাবে পাহাড় কেটে সাবাড় করছে দিচ্ছে মহালছড়ি সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রতন শীত। বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫ অনুযায়ী পাহাড় কাটা অবৈধ হলেও তা তোয়াক্কা করছে না এই জনপ্রতিনিধি। তিনি মহালছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবেও দায়িত¦ পালন করছে।
সূত্রে জানা গেছে,মহালছড়ি উপজেলায় স্থানীয় সরকার অধিদপ্তরের আওতায় প্রায় ১৮শ মিটার রাস্তা কার্পেটিং এর কাজ শুরু হয়। এর নির্মাণ ব্যয় ৩ কোটি ১৩ লক্ষ টাকা। ঠিকাদার হিসেবে প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ পায় সিকদার এন্টারপ্রাইজ ও কবি রঞ্জন ত্রিপুরা। তবে উপ-ঠিকাদার হিসেবে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে মহালছড়ি সদর ইউপি চেয়ারম্যান রতন শীল। আর এই রাস্তা নির্মাণের কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে পাহাড়ে মাটি। মহালছড়ি-চোংড়াছড়ি সড়কের শান্তি নগর এলাকায় খাড়া পাহাড় কেটে সাবাড় করে দিচ্ছে তিনি। প্রভাবশালী হওয়ায় প্রকাশ্যে পাহাড় কাটলেও কেউ বাঁধা দিচ্ছে না। প্রতিদিনই মাটিবাহী ট্রাক্টর পাহাড় কেটে মাটি নিয়ে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে প্রায় শত ফুট উচ্চতার খাড়া পাহাড়ের একটি বড় অংশ কেটে নিয়েছেন তিনি।পাহাড় কাটা এখনো অব্যাহত রয়েছে। খাড়াভাবে পাহাড় কাটায় আসন্ন বর্ষায় পাহাড়ের বাকি অংশ ধসে পড়ার আশংকা রয়েছে।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে পাহাড়ের মালিক মো.আব্দুর রহিম জানান,‘ নির্মাণধীন রাস্তা সমান করার জন্য পাহাড়ের মাটি কাটছে রতন চেয়ারম্যান। বেশ কয়েকদিন যাবত কাটার পর পাহাড়ের একটি বড় অংশ কাটা শেষ হয়েছে।’এসময় তিনিও বলেন,‘ বর্ষায় পাহাড় ধসে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে।’
খাগড়াছড়ি পরিবেশ সুরক্ষা আন্দোলনের সভাপতি প্রদীপ চৌধুরী জানান ‘অপরিকল্পিতভাবে পাহাড় কাটার কারণে পার্বত্য চট্টগ্রামে বর্ষায় পার্বত্য জেলায় বড় ধরনের বিপর্যয় নেমে আসে। প্রশাসনিক ভাবে পাহাড় কাটা নিয়ন্ত্রণ করতে না পারায় দেদারছে পাহাড় কাটা চলছে।অবিলম্বে তাদের অপতৎপরতা বন্ধ করা না গেলে ভয়াবহ পরিবেশ ঝুঁকির আশঙ্কা রয়েছে।’
বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫ এর ৬(খ) অনুযায়ী পরিবেশ সুরক্ষায় পাহাড় কাটা সম্পর্কে বাধা-নিষেধ রয়েছে। কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কতৃর্ক সরকারী বা আধা-সরকারী বা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের মালিকানাধীন বা দখলাধীন বা ব্যক্তিমালিকানাধীন পাহাড় ও টিলা কর্তন বা মোচন করা যাইবে না ’
এই বিষয়ে জানতে চাইলে মহালছড়ি সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রতন শীল জানান,‘ রাস্তার কাজ আমি করছি। রাস্তা সমান করার জন্য পাহাড়ের মাটি ব্যবর্হা করা হয়েছে।’ তবে তিনি নিজেকে পাহাড় কাটার সাথে সম্পৃক্ত নয় দাবি করে পাহাড় কাটা নিয়ে সংবাদ পরিবেশন না করার অনুরোধ জানান।
মহালছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকতা(ইউএনও) প্রিয়াংকা দত্ত জানান,‘ পাহাড় কাটার বিষয়ে আমার কাছে কোন তথ্য নেই। আমি এই বিষয়ে খোঁজ নিয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করব। ’